বইয়ের নাম : ‘একটা দেশ যেভাবে দাঁড়ায়’, লেখক : রউফুল আলম
ভূমিকা
প্রায় দুই বছর আগে রউফুল আলমের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় তাঁর লেখার মাধ্যমে। দৈনিক প্রথম আলো ও সোশ্যাল মিডিয়ায়। উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক তার কয়েকটি লেখা ও অভিমত আমার নজরে পড়ে। ইউরোপ-আমেরিকার শিক্ষাব্যবস্থা ও গবেষণা সংস্কৃতির রীতিনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পশ্চাৎপদতা, সামাজিক উদাসীনতা ও সীমাবদ্ধতা এবং তরুণদের আকুতি নিয়ে প্রেরণামূলক লেখাগুলো পড়ে আমি বেশ মুগ্ধ হই। একটা দেশ যেভাবে দাঁড়ায় বইটি মূলত দৈনিক প্রথম আলো এবং অন্যান্য বিজ্ঞান কাগজে বিভিন্ন সময় প্রকাশিত তাঁর। অণুপ্রবন্ধগুলোর (Short Articles) একটি সংকলন।
এই লেখাগুলোতে বিশ্বজুড়ে চলমান জ্ঞান-গবেষণার প্রতি লেখকের গভীর পর্যবেক্ষণ ও ভালোবাসা ফুটে ওঠে। পাশাপাশি বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গবেষণা ও তারুণ্যের মেধাশক্তি কীভাবে বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়গুলো তিনি তুলে ধরেছেন। কীভাবে শত সীমাবদ্ধতার মাঝেও এই প্রতিযোগিতাময় পৃথিবীতে বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে, এ দেশের নতুন প্রজন্মের মেধাবী তরুণেরা যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিতে পারবে, সে বিষয়ক দিকনির্দেশনার প্রতিফলন ঘটেছে। দেশের গবেষণা সংস্কৃতির চলমান অবস্থা, নীতিনির্ধারকদের অজ্ঞতা এবং সীমাহী অবহেলা, শিক্ষক এবং গবেষক নিয়োগে অনিয়ম প্রভৃতি কীভাবে আমাদের মেধাবী তরুণ-তরুণীদের প্রতিনিয়ত বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় (Global Competition) পিছিয়ে দিচ্ছে–বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তসহ উপস্থাপিত হয়েছে বইটিতে।
আর ভবিষ্যতের পৃথিবীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যাপ্তি, প্রসার এবং সুযোগ মানব সভ্যতায় এক অভূতপূর্ব সামাজিক ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের কারণ হবে। দেশে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের। এ কলে একবিংশ শতাব্দীর কিশোর ও তরুণদের আমরা। কীভাবে উদ্বুদ্ধ করব, কীভাবে তাদের মানবসম্পদে গড়ে তুলতে মানসম্পন্ন গবেষণার দ্বার উন্মোচন করব, নতুন শিল্পবিপ্লবের উপযোগী কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের বাহু এবং দৃষ্টিকে প্রসারিত করতে পারব–তারই আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে।
যারা দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন এবং কিশোর-তরুণদের জীবনকে পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে চান–এ বইটি তাঁদের জন্য খুবই সহায়ক ও উদ্দীপক হবে বলে আমার বিশ্বাস।
–ড. সাইফ ইসলাম
প্রফেসর এবং বিভাগীয় প্রধান
ডিপার্টমেন্ট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া–ডেভিস, যুক্তরাষ্ট্র।
এই বইটা বাংলাদেশের প্রত্যেক ছাত্র, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক ও সরকার প্রধানের পড়া দরকার। যদি বইয়ের কথাগুলো বাস্তবে দেশে বাস্তবায়ন করা যায় তবে বাংলাদেশের ছাত্ররা উন্নত বিশ্বের সাথে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের মানচিত্রে একটা উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত করাতে পারবে।
সবার কাছে অনুরোধ থাকবে বইটা পড়ার জন্য। বইটা পড়ার পর আপনাদের সামনে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। পড়ালেখা করার নতুন প্রেরণা, শক্তি খুঁজে পাবেন। শুধু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার নয়, গবেষক-বিজ্ঞানী হওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি হবে।
হ্যাপি রিডিং 📚